আমাদের উপর কুরআনের হক বা পাওনাসমূহ
আমাদের উপর আল্লাহ পাকের সবচেয়ে বড় এহসান আর দয়া এটা যে তিনি আমাদের কুরআনে কারীম দান করেছেন। এটা এমন এক জিনিস যা সরাসরি আল্লাহ তা’আলার পক্ষ থেকে আমাদের কাছে পৌঁছেছে। এবং এরই মাধ্যমে আমরা আল্লাহ তা’আলার সবচেয়ে বেশী নৈকট্য লাভ করতে পারি। আল্লাহ তা’আলা আমাদের অন্য যত নেয়ামত দান করেছেন তা কোন না কোন মাধ্যম হয়ে এসেছে, সরাসরি না। কুরআন সরাসরি আল্লাহ তা’আলার সিফাত। মাঝখানে কোন মাধ্যম নাই। হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম, তিনি ও আমাদের জন্য বড় নেয়ামত। কিন্তু তিনি সরাসরি আল্লাহ তা’আলার জাত থেকে আসেন নি। তিনি পিতা মাতার মাধ্যমে দুনিয়াতে এসেছেন। সরাসরি না। মিশকাত শরীফে একটা হাদীস আছে,“বান্দা কোন কিছু দ্বারা আল্লাহ তা’আলার এত বেশী নৈকট্য হাসিল করতে পারবে না যেটা ঐ জিনিস দিয়ে পারবে যা সরাসরি আল্লাহ তা’আলার নিকট থেকে এসেছে।”ঐ হাদীসেই এটা ও আছে “ইয়ানি কুরআন অর্থাৎ কুরআন (যা সরাসরি আল্লাহ তা’আলার পক্ষ থেকে এসেছে)”।
এই কুরআন সম্পর্কে হাদীসে এসেছে,
১. যে এই কুরআনকে সামনে রাখলো, পথ প্রদর্শক বানালো এই কুরআন তাকে পথ দেখায়ে জান্নাতে নিয়ে যাবে।
২. আর যে কুরআনকে পিছে রাখলো, গুরুত্ব দিল না এই কুরআন তাকে জাহান্নামে টেনে নিবে। পেছনে রাখার অর্থ বাহ্যিক ভাবে শুধু পেছনে রেখে দেয়া না। যদিও সে চোখের সামনে রেখেছে কিন্তু কুরআনে কারীমের যে হুক আছে তা সে আদায় করলো না।
কুরআনের হুকুক ৬টি
১. কুরআন সহী করে পড়া।
২. কুরআনকে মুহাব্বাত করা।
৩. কুরআনকে শ্রদ্ধা করা।
৪. কুরআনের উপর আমল করা।
৫. কুরআনের দিকে মানুষকে দাওয়াত দেয়া।
৬. কুরআনকে আল্লাহর জমীনে কায়েম করা।
এসবই কুরআনের হুকুক অর্থাৎ আমাদের কাছে পাওনা। এই জন্য কুরআনের যে হক আছে তা আমাদের অন্তরে বসা দরকার। কুরআনে কারীমকে মুহাব্বাত করতে হবে। বন্ধুর সাথে কথা বলতে তো মজাই লাগে, কেন? মুহাব্বাত আছে তাই। কিন্তু কুরআন তিলাওয়াত করতে মজা লাগে না, কেন? মুহাব্বাত নাই তাই। কুরআনের প্রতি যে আমাদের শ্রদ্ধা থাকতে হবে, সেটা নেই। কুরআনের উপর বই রেখে দেই আমরা। গিলাফ ছাড়া রেখে দেই, ময়লার পাহাড় জমে যায়। নিজ সন্তানকে এভাবে একটা দিন রাখতে পারবেন?